Ticker

6/recent/ticker-posts

সরিষার তেলে নানান গুনাগুন

 

সরিষার তেলে নানান গুনাগুন


সরিষার তেল বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে যেন মিশে আছে। একসময় আমাদের গ্রামবাংলার একমাত্র ভোজ্যতেল ছিল সরিষার তেল। সরিষার তেলের  ওষুধি গুণাগুণের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই তেল। সরিষার তেল যেমন প্রয়োজনীয় তেমন উপকারীতা ও বেশ। এ ছাড়া সরিষার তেল ক্ষুধা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সর্বজনীনভাবে সরিষার তেলের ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন করম কাজে। তবে এই  সরিষার তেলের গুণাগুণ সম্পর্কে যাঁরা অবগত আছেন, তাঁরা কিন্তু নিয়মিত ব্যবহার করে যাচ্ছেন সরিষার তেল।



এই শীতে ত্বকের যত্নে সরিষার তেল


প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার:


সরিষার তেল ওমেগা -3 এবং ওমেগা -6 সহ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। ত্বকে সরিষার তেল প্রয়োগ করা শুষ্ক ত্বককে ময়শ্চারাইজ এবং পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে, এটিকে রুক্ষ এবং ফ্ল্যাকি হওয়া থেকে রোধ করে।
এ ছাড়া সরিষা তেল ঠান্ডা ও কাশি উপশমে সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে। যখন বুকে প্রয়োগ বা তার দৃঢ় সুবাস নিশ্বাসের মাধ্যমে নেওয়া হয়, এটা শ্বাসযন্ত্রের নালির থেকে কফ অপসারণেও সাহায্য করে। শুধু খাওয়ার জন্যই নয়, সরিষার তেল চুল ও ত্বকের যত্নেও কাজে লাগে।



বিস্তারিত জানতে Click  করুন  সরিষার তেলের উপকারিতা


  • ত্বকের তামাটে ভাব দূর করে


সরিষার তেল ত্বকের তামাটে ভাব ও দাগ দূর করে এবং ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করে। এ জন্য বেসন, দই, সরিষার তেল ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি আপনার ত্বকে লাগালে ভাল উপকারিতা পাবেন। ১০-১৫ মিনিট পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করতে হবে।


  • সরিষার তেল প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে ও কাজ করে 


সরিষার তেল খুব ঘন হয় এবং এতে উচ্চমাত্রার ভিটামিন ই থাকে। এই তেল ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ থেকে ত্বককে সুরক্ষা করে। তাই এটি ত্বকের ক্যানসারও প্রতিরোধ করতে পারে। ভিটামিন ই বলিরেখা ও বয়সের ছাপ দূর করতেও সাহায্য করে। তাই সানস্ক্রিন লোশনের মতোই ব্যবহার করতে পারেন এই সরিষার তেল। তবে এই তেল যেহেতু ঘন, তাই ত্বকে লাগানোর পর ভালোভাবে ঘষে নিতে হবে, যেন অতিরিক্ত তেল লেগে না থাকে। অন্যথায় অতিরিক্ত ধুলাবালু জমা হয়ে ত্বকের ভালোর চেয়ে খারাপই হতে পারে বেশি।


  •  চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক

সরিষার তেল চুলের বৃদ্ধিতে কাজ করে। অকালে চুল সাদা হয়ে যাওয়া ও চুল পড়া কমাতে সরিষার তেল খুবই  কার্যকরী। সরিষার  তেলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। বিশেষ করে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকে সরিষার  তেলে  । বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন-এতে রূপান্তরিত হয়ে চুলের বৃদ্ধিতে অনেক ভালো কাজ করে। এ ছাড়া এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফ্যাটি অ্যাসিড ও ম্যাগনেশিয়াম থাকে, যা চুলের বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে। এ ছাড়া চুল কালো করার জন্য রাতে চুলে সরিষার তেল মালিশ করা যেতে পারে ।


  • উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে

সরিষার তেল পরিপাক, রক্ত সংবহন ও রেচনতন্ত্রের শক্তিশালী উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। সরিষার তেল খাওয়ার পাশাপাশি বাহ্যিকভাবে শরীরে মালিশ করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও ঘর্মগ্রন্থি উদ্দীপিত হয় এবং শরীরের তাপমাত্রা কমে।


  • ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়

সরিষার তেলে গ্লুকোসিনোলেট নামক উপাদান থাকে, যা অ্যান্টিকারসিনোজেনিক উপাদান হিসেবে পরিচিত। তাই এটি ক্যানসারজনিত টিউমারের গঠন প্রতিরোধে কাজ করে। এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট কোলোরেক্টাল ও গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দিতে পারে ।


  • চুল পাকা কমাতে সরিষার তেল

সরিষা তেলের পুষ্টি উপাদান, ভিটামিন, মিনারেল চুলের অকালপক্বতা রোধ করতে পারে । প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই  সরিষার তেল মালিশ করতে হবে চুল এবং মাথার তালুতে যা আমাদের  চুল পাকা রোধ করবে।


  • ঠোঁটফাটা রোধ করে 

ফাটা ঠোঁটের জন্য, ঠোঁটে অল্প পরিমাণে সরিষার তেল লাগানো যেতে পারে যাতে আর্দ্রতা পাওয়া যায় এবং আরও শুকিয়ে যাওয়া রোধ করা যায়। কোন জ্বালা এড়াতে শুধুমাত্র একটি ক্ষুদ্র পরিমাণ ব্যবহার করা হয় তা নিশ্চিত করুন।


  • কার্ডিওভাসকুলার উপকারিতা

সরিষার তেল মনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ বলে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। এর ফলে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমে।


  • ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ

সরিষার তেলে প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ত্বকে প্রয়োগ করা ত্বকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে, যা শীতের মাসগুলিতে আরও সাধারণ হতে পারে।


  • DIY ফেস মাস্ক

মধু, দই বা অ্যালোভেরার মতো অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে DIY ফেস মাস্কে সরিষার তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এই মুখোশগুলি ত্বককে হাইড্রেট করতে, প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে এবং সামগ্রিক ত্বকের গঠন উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।


আরও জানতে ক্লিক করুন


সতর্ক করা:

ত্বকে সরিষার তেল ব্যবহার করার আগে, কোনও অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া বা সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করার জন্য একটি প্যাচ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। উপরন্তু, বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করতে ত্বকের যত্নের জন্য উচ্চ-মানের, ঠান্ডা চাপা এবং জৈব সরিষার তেল বেছে নিন।

মনে রাখবেন যে পৃথক ত্বকের ধরন পরিবর্তিত হয় এবং এক ব্যক্তির জন্য যা কাজ করে তা অন্যের জন্য কাজ নাও করতে পারে। আপনার যদি নির্দিষ্ট ত্বকের উদ্বেগ বা শর্ত থাকে, তবে ব্যক্তিগতকৃত পরামর্শের জন্য একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ বা স্কিন কেয়ার পেশাদারের সাথে পরামর্শ করা সর্বদা ভাল ধারণা।



Post a Comment

0 Comments